জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন, সরকার অতীতের মতো প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করে আবারো নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে বিনাভোটে ফের ক্ষমতা দখল করতে চায়। পুলিশ প্রশাসন মানুষের ভোটাধিকার, কথা বলার অধিকার হরণ করতে সরকারের আজ্ঞাবহ বাহিনী হিসেবে কাজ করছে। জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনে বিশ্বাসী। সভা সমাবেশ যে কোন রাজনৈতিক দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সিলেটের স্থানীয় প্রশাসন বার বার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনে বাধাঁ দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকারকে ভুলুন্টিত করেছে, তারা নির্বাচনের আগাম পরিবেশকে চরমভাবে বিঘ্নিত করেছে। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন সিলেটের দীর্ঘদিনের লালিত রাজনৈতিক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে কলংকিত করেছে। এর পরিনতি ভাল হবেনা।
তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে রাজপথে নেমেছে। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে জামায়াত রাজপথে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে। অবিলম্বে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও আলেম-উলামাদের মুক্তি দিন। জামায়াতের সভা সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করুন। ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারান্তরীণ ৭নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলার সায়ীদ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, জামায়াত নেতা আজিজুল ইসলামসহ কারাগারে আটক জামায়াতের ১৮ নেতাকর্মীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় স্বৈরাচারী দুঃশাসনের জন্য ক্ষমতাসীনদের জনতার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি শনিবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহাল, আমীরে জামায়াতসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবীতে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। মিছিল নগরীর বন্দরবাজার থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নয়াসড়ক পয়েন্টে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।
মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, জেলা উত্তরের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, জেলা উত্তরের সেক্রেটারী ও জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, মহানগর সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, আব্দুল কাইয়ুম, নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, মাওলানা মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সভাপতি সিদ্দিক আহমদ ও সেক্রেটারী শরীফ মাহমুদ প্রমূখ।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, জামায়াতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা প্রমাণ করে স্থানীয় প্রশাসন সরকারের দলীয় বাহিনী হিসেবে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। তারা আইন ও মানবাধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করেছে। প্রশাসনকে জনতার ম্যান্ডেট বুঝে সঠিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে। নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহাল, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দও আলেম-উলামাদের মুক্তি দিতে হবে, জামায়াতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনের সুযোগ দিতে হবে এবং বন্ধকৃত সকল ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া খুলে দিতে হবে। দেশকে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে সরকারকে ফ্যাসিবাদী আচরণ ত্যাগ করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসতে হবে।