- আধাঁর কেটে যাবে, এদেশে
- ইসলামের বিজয় ঠেকানো যাবেনা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা মাহে রমজানের পর ঈদ উদযাপন করেছি। এখন পর্যালোচনার বিষয় রমজানের শিক্ষা আমাদের জীবনে কতটা প্রয়োগ করতে পেরেছি। নিজেদের কতটা মুত্তাকি হিসেবে গড়ে তুলতে পেরেছি। ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আমরা নিজেদের কতটা প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছি। এসব হচ্ছে ঈমানের প্রধান দাবী। সিয়াম সাধনার একটি মাস চলে গেছে। কিন্তু এর শিক্ষার আলোকে বাকী ১১ মাস জীবন পরিচালনা করার বাস্তব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হতাশার কিছু নেই। জুলুম-নিপীড়ন ও ফাসি দিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবেনা। এই আধাঁর কেটে যাবে। ইনশাআল্লাহ। প্রচলিত সকল ভ্রান্ত মতবাদের উপর ইসলামের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবেনা। আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাজ করি। আল্লাহ বিভিন্নভাবে বিপদ-মুসিবত দিয়ে আমাদের ঈমানের পরীক্ষা নেন। এই নিয়ে আমাদের কোন আক্ষেপ নেই। পূণ্যভুমি সিলেট হচ্ছে ইসলামী আন্দোলনের জন্য উর্বর ভূমি। এই অঞ্চলের ভাইদের ত্যাগ ও কুরবানীর কারণে এখানে ইসলামী আন্দোলনের ভীত মজবুত হচ্ছে। দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল দ্বীনি ভাইদেরকে দেশের ইসলাম ও গণতন্ত্রের জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
তিনি মঙ্গলবার রাতে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে দেশে বিদেশে অবস্থানরত সিলেটের সাবেক ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সকল স্তরের নেতকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল ঈদ পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে, মহানগর সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাড়ে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান এবং কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও সিলেট অঞ্চল পরিচালক এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক সিলেট অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক ফজলুর রহমান। অনুষ্ঠানে দারসুল কুরআন পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ জনাব আব্দুল্লাহিল মামুন আল আজমী।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ও অংশ নেন, জেলা দক্ষিণের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, জেলা উত্তর জামায়াতের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, সিলেট মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, মহানগরীর সাবেক নায়েবে আমীর বর্তমান কানাডা প্রবাসী ডা. সায়েফ আহমদ, জেলা দক্ষিণের সাবেক সেক্রেটারী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, মহানগরীর সাবেক সেক্রেটারী যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিরাজুল ইসলাম শাহীন, সাবেক দায়িত্বশীল যুক্তরাজ্য প্রবাসী আতিকুর রহমান জিলু, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আবু উবায়দা, সৌদী প্রবাসী শায়খ আজাদ সোবহানী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ জমিরুল ইসলাম বাবু, কানাডা প্রবাসী জুলকার নাইন চৌধুরী, সিলেট মহানগর সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব ও ড. নুরুল ইসলাম বাবুল প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, রমজান এসেছিল মুসলমানদের তাকওয়াবান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। আমরা কতটুকু তাকওয়া অর্জন করেছি সেটা পর্যালোচনা করতে হবে। ঘাটতি পূরণ করে নিজেদেরকে পরিপূর্ণ ঈমানদার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ক্ষমতাসীন সরকার জামায়াতকে গণবিচ্ছিন্ন করতে ষড়যন্ত্র করেছিল। আর হয়েছে এর উল্টো। বিপদগ্রস্থ মানুষগুলো এখন জামায়াতের দিকে চেয়ে রয়েছে। কারণ জামায়াত দেশের মানুষের ভরসাস্থলে পরিনত হয়েছে। ঢাকার বঙ্গবাজারের আগুণে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা তাদের কঠিন সময়ে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান তীব্রভাবে অনুভব করেছে। কারণ যেখানেই সঙ্কট ও দুর্যোগ সেখানেই ছুটে চলা ব্যক্তির নাম ডা. শফিকুর রহমান। তিনি আজ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলার কারাগারে আছেন। আমাদের অনেক শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আজ কারান্তরীণ। কিন্তু আমাদের জেল-জুলুমের ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবেনা। ইসলাম, দেশ ও জাতির স্বার্থে জামায়াত অতীতের ন্যয় অগ্রনী ভুমিকা পালনে অঙ্গিকারাবদ্ধ ও সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুত।
এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, দেশ জাতি আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। সামনে আরো কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। এমন কঠিন সময়ে ইসলামী আন্দোলনের ভাইদেরকে আরো বেশী করে দ্বীনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে। মাহে রমজানের শিক্ষার আলোকে নিজেদেরকে আদর্শবান মানুষে পরিনত করতে হবে। দেশ জাতি ও ইসলামের কল্যাণে ইসলামী আন্দোলনের ভাইদেরকে অতীতের ন্যায় গুরু দায়িত্ব পালনের শপথ নিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরের ন্যয় এবারো আমরা অনলাইনে ঈদ পূণর্মিলনী করতে পেরেছি। দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বিপুল সংখ্যক ভাই শত ব্যস্ততা স্বত্তেও সময় দিয়ে এই অনুষ্ঠানকে সার্থক করেছেন। এজন্য সবাইকে আন্তরিক মুবারকবাদ। আগামীতে দেশ ও জাতির কঠিন পরিস্থিতিতে নিজ অবস্থান থেকে ইসলামী আন্দোলনকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।